সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:৪৮ অপরাহ্ন

আদমদীঘিতে বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি বৃদ্ধি

আনোয়ার হোসাইন,আদমদীঘি (বগুড়া)
  • আপডেট টাইম শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪
  • ১১০ জন দেখেছে


মিটার চুরির পর মালিককে দেওযা হয় বিকাশ নাম্বার


বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ইরি বোরো আবাদ মৌসুমের সেচ শুরুতেই বিভিন্ন এলাকায় ইরি বোরো স্ক্রীমের মাঠ থেকে বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার সহ ধান, চাল,সরিষা, হাঁস মুরগী সহ ছোটখাটো বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র চুরির প্রবনতা বেড়েই চলেছে। চুরিরোধে পুলিশের তেমন ভুমিকা নেই।এমনকি মিটার চুরির পর মালিককে বিকাশ নাম্বার লেখে দিযে যাচ্ছে চিরকুটে।

ফলে চলতি ইরি বোরো স্ক্রীমে সেচ সংকটের আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। চুরি রোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার তেমন কোন কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় কোন ক্রমেই থামছেনা বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ সহ কৃষকের বাড়ীর চুরি।

জানাযায়, আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ইরি বোরো স্ক্রীম থেকে চলতি মৌসুমে উপজেলার জিনইর, নশরৎপুর, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম. বিহিগ্রাম,বনতইর, বড়িয়াবার্তা, হাউসপুর, বেজার ও ছাতিয়ানগ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠ থেকে প্রায় ৫০ টি বৈদ্যুতিক মিটার ও দুটি ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে। মিটার ও ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সদস্যরা মিটার চুরির সময় একটি চিরকুটে বিকাশ নম্বর দিয়ে নির্ধারিত টাকা দাবী করে মিটার ফেরৎ দিবে বলে জানায়।
অনেক কৃষক হয়রানির ভয়ে বিকাশে টাকা দিয়ে মিটার ফেরৎ পেলেও চোরচক্রের পুনরায় চুরির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান। আবার অনেকে চোরচক্রের দাবি করা টাকা বিকাশের মাধ্যমে দেয়ার পরও থামছে না চুরি। চোরেরা একই মিটার একাধিকবার চুরি করছে এবং প্রতিবারই গভীর নলকুপ মালিকদের নিকট থেকে একই কৌশল ব্যবহার করে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। কৃষকদের দাবি, বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশ এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পারছে না।


কোন ক্রমেই থামানো যাচ্ছেনা বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি। ফলে চলতি ইরি বোরো স্ক্রীমে সেচ সংকটের আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। মঠপুকুরিয়া গ্রামের গভীর নলকুপের মালিক গোলাম রব্বানী বলেন, গত এক মাসে এই ইউনিয়নের কয়েকটি গভীর নলকুপ থেকে প্রায় ২০টি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে মঠপুকুরিয়া গ্রামের হাজী মোহাম্মাদ আলীর মিটার চুরি হয়েছে দ্ইু বার। একই গ্রামের আব্দুস সালামের মিটার চুরি হয়েছে তিনবার। একই ভাবে উপজেলার পাহালোয়নপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন ও কামরুল ইসলামের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় বেলাল হোসেন আদমদীঘি থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন। বেলাল হোসেন জানায়, থানায় ডায়েরী করার পরও পুলিশ কোন সুরাহা করতে পারেনি। গভীর নলকুপের মালিক গোলাম রব্বানী জানান, মিটার চুরির পর চোরেরা নলকুপের মালিকদের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করে।

টাকা দিতে রাজি হলে তারা একটি বিকাশ ও নগদ নম্বর দেয় এবং টাকা দেয়া হলে একটি নির্জন জায়গায় মিটার রেখে যায়। তিনি বলেন, এ ভাবে চুরি অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে ইরিবোরো আবাদ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ ছাড়া মৌসুমের শুরু থেকে চুরি শুরু হওয়ায় অনেকে এখন ধান রোপন করতে পারেননি।


আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বৈদ্যুতিক মিটার চুরির প্রবনতা স্বীকার করে বলেন, চোর শনাক্ত করে গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুপচাঁচিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের জানান, তার আওতাধীন এলাকায় মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি থামছেই না। গত দুই মাসে প্রায় ৫০টি মিটার ও ট্রান্সমিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com