চলতি মৌসুমে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকের ক্ষেত আর আঙিনা জুড়ে এখন শুধু মরিচ আর মরিচ। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর উপজেলায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার জগৎপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ সবুজ খেত। তার ভেতর উঁকি দিচ্ছে লাল-সবুজ-কালচে মরিচ। কিষাণ-কিষাণি বেছে বেছে লাল টুকটুকে পাকা মরিচ তুলছেন। মরিচের সেই লাল আভা ছড়িয়ে পড়ছে কৃষকের চোখে-মুখে।
উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদে বছরের পর বছর ধরে মরিচ চাষ হচ্ছে। তিতাস নদের তীরে জেগে ওঠা চরে চাষ হয় এ ফসলের। এ মরিচ বিক্রির টাকায় অনেক কৃষকের সারা বছরের সংসারের খরচ জোগাড় হয়ে যায়।
কৃষকেরা জানান, কার্তিক মাসে মরিচের জমি তৈরি করেন তারা। অগ্রহায়ণ মাসে লাগান বীজ। চলতি চৈত্র মাসে শুরু হয়েছে মরিচ তোলা। এ সময় কাঁচা মরিচ বিক্রির পর পাকা মরিচগুলো শুকানো হয়। শুকনো মরিচ সংরক্ষণ করে বছরের যেকোনো সময় বিক্রি করা যায়। ক্ষেত থেকে মরিচ তোলায় ব্যস্ত চাষিরা। মরিচ তুলে কেউ বড় ঝুড়িতে রাখছেন, কেউ বস্তায় ভরছেন। কৃষকের ক্ষেত, বাড়ির উঠান আর আঙিনা এখন পাকা মরিচে উপচে পড়ছে। চলছে মরিচ শুকানোর ধুম।
কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ক্ষেত থেকে উঠানো পর্যন্ত এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে গড়ে ১০-১৫ হাজার টাকা এবং বিক্রি করা যায় ১৮-২০ হাজার টাকা। মরিচ চাষি আমিনুল ইসলাম বাসসকে বলেন, অনেক আশা করে এইবার মরিচের আবাদ করেছিলাম। ভালো দামও পাচ্চি শুকনা মরিচ ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। এক একর জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে এক একর জমিতে মরিচ উৎপাদিত হয়েছে ৩০০ কেজি, যা বিক্রি করে ৭২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। বাকি মরিচ বিক্রি করলে অধিক লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা সদর বাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী নজরুল বাসসকে বলেন, উপজেলায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান মূল্যেও লোকসানের মুখে পড়বেন না চাষিরা।
চাষিরা বলেন, এখন প্রতি কেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন জানান, চাষিরা গত এক মাস ধরে নতুন মরিচ তুলতে শুরু করেছেন। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত মরিচ উৎপাদিত হয়েছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
একাত্তরের দেশ