মাগুরায় চলতি বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় শীতকালিন পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল ১০ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৭৫ হেক্টর বেশি।
এ বছর সবচেয়ে বেশি শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে শ্রীপুর উপজেলায়। এ উপজেলায় ৫ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলায় ১ হাজর ২৬৫ হেক্টর, শালিখায় ৭৩০ হেক্টর ও মহম্মদপুর উপজেলায় ২ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। চাষকৃত জমি থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ১২৫মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
এছাড়া জেলায় ৮১৯ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। এবছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ থেকে ইতিমধ্যে ১৪ হাজার ৪৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বারি-১, লাল তীর কিং, তাহেরপুরী, মেটাল কিং ও লাল তীর কিং হাইব্রিডসহ স্থানীয় উন্নত জাতের পেঁয়াজ চাষ করছেন। পেঁয়াজ চাষ সফল করতে সুষম সার ব্যবহার, জমিতে সেচ দেয়া, রোগ ও পোঁকামাকড় দমনে বালাই নাশক ব্যবস্থাপনাসহ কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সময়মত কৃষকরা পেঁয়াজের আবাদ শেষ করতে পারায় ফলন ভালো হয়েছে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, ৬৯ শতক জমিতে উচ্চফলনশীল লালতীর কিং জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ উঠাতে শুরু করেছেন তিনি। স্থানীয় কৃষি বিভাগ পেঁয়াজ চাষে তাকে নানা পরমর্শ দিয়ে সহযোগিতা করায় পেঁয়াজের ভালো ফলন পেয়েছেন। চাষকৃত জমি থেকে প্রায় ১০০ মন পেঁয়াজ পাওয়ার পাশাপাশি ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
শ্রীপুর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের অপর কৃষক খান আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি ১ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে উন্নত জাতের রানি-১ পেঁয়াজের চাষ করছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। চাষকৃত জমি থেকে প্রায় ২০০ মণ পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. ইয়াছিন আলী জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মাটি পেঁয়াজ চাষের উপযোগি ছিল। এছাড়া সার ও বালাই নাশকের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ থাকায় জেলায় এ বছর পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ উত্তোলনের কাজে ব্যস্ত সমায় কাটাচ্ছেন। ভালো দামে কৃষকরা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একাত্তরের দেশ