মালয়েশিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদা আর ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হলো বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি পাঁচতারকা হোটেলে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
এ বছরের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনটি রমজানের মাসে পড়ায়, বাংলাদেশ হাইকমিশন স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ৮ মার্চ ২০২৪ তারিখে আয়োজন করে।
মহান স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে এদিন একটি কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কিয়ং। এসময় মন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
এরপর মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রীসহ দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ও তার সহধর্মিণী মিসেস প্যান্ডোরা চৌধুরী কেক কাটেন এবং আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন।
হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।
বক্তব্যে তিনি দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসাবে মালয়েশিয়া কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকে গভীর কৃতজ্ঞতার স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক মালয়েশিয়া সফর স্বাধীন বাংলাদেশের সাথে মালয়েশিয়ার কূটনীতিক সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও ঐতিহাসিক বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জ্বালানি, পর্যটন ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।
রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে মালয়েশিয়ার জোরালো সমর্থনের গভীর প্রশংসা করেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা বাড়তি মাত্রা যোগ করে এবং দর্শকদের বিমোহিত করে। নৃত্য পরিবেশনায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার মহাকাব্যিক সংগ্রাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়ন যাত্রা তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানস্থলে সুসজ্জিত বাংলাদেশ কর্নারে ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য ও হস্তশিল্প প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ক প্রকাশনা কর্নারে স্থান পায় যা অতিথিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশের সাফল্যের গল্পের সচিত্র বর্ণনাসহ অডিটোরিয়ামটি সুসজ্জিত করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পর্যটন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, বিনিয়োগ এবং দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয় যা ব্যাপক প্রশংসা পায়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, কূটনীতিক, মালয়েশিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।