গাইবান্ধা থেকে মাহমুদুল হাবিব রিপন গত ১০ বছরেও বিচার কাজ শেষ হয়নি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের এসিল্যান্ড সাঁওতাল সম্প্রদায়ের অবিদীয় মার্ডি হত্যাকাণ্ডের। তার স্বজনরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচার না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। এদিকে অবিদীয় মার্ডির হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে শনিবার অবিদীয় মার্ডি স্মৃতি রক্ষা কমিটি, গোবিন্দগঞ্জ এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
গাইবান্ধার শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভুমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাসকে। সমাবেশে বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী নেতা বার্ণাবাস টুডু, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর, শহীদের পরিবারের সদস্য হীরা মুরমু, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাড. কুশলাশীষ চক্রবর্ত্তী সাগর, অ্যাড. ফারুক কবির, অ্যাড. শাহনেওয়াজ খান, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, ব্রিটিশ সরেন, নারী নেত্রী নাজমা বেগম, হাসান মোর্শেদ দীপন, মনির হোসেন সুইট, কাজী আব্দুল খালেক, আনিছুর রহমান ময়নুল, সাঁওতাল নেত্রী সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা প্রমুখ। এর আগে একটি মিছিল গাইবান্ধা জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশের শুরুতে শহীদ অবিদীয় মার্ডির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমাবেশে বক্তারা গত ৩ জানুয়ারি গোবিন্দগঞ্জের রাজা বিরাট এলাকায় সাঁওতাল পল্লীর জুলিয়াস সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও মারপিটের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
বক্তারা আরও বলেন, সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের পরিকল্পনায় অবিদীয় মার্ডিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার কথা। অথচ তা না হওয়ায় বিচারের দাবি নিয়ে ১০ বছর ধরে আদালতের দ্বারে ঘুরছেন স্বজনরা।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি অবিদীয় মার্ডি নিজ বাড়ি নওগাঁর ধামুইরহাট থেকে মোটরসাইকেলযোগে গোবিন্দগঞ্জ অফিসে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম আখ খামারের কাটা-ফাসিতলা সড়কের মাঝামাঝি পৌঁছিলে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাঁকে আখ খামারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে রেখে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, গাইবান্ধার তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ ১৩ জনকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন নিহতের বড়ভাই ফাদার স্যামসন মার্ডি।