উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর পর বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে কাতার হয়ে লন্ডন যাবেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বারবার বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর ইচ্ছা ও চেষ্টা করলেও তা পারেনি খালেদা জিয়ার পরিবার। অনেকটা বাধ্য হয়ে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে, পোর্টো সিস্টেমেটিক অ্যানেসটোমেসির মাধ্যমে দেয়া হয় লিভারের চিকিৎসা। তখনও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা জার্মানির হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তির সুপারিশ করেছিল মেডিকেল বোর্ড।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাজা। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। এরপরই তার স্বাস্থ্যের অবনতির কথা জানাতে থাকেন নেতা এবং পরিবারের সদস্যরা। দুই বছর পর কোভিড মহামারীর সময় আওয়ামী লীগ সরকার তাকে কারামুক্তি দিলেও শর্তজুড়ে দেয় তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না।
নির্বাহী আদেশে মুক্তির পর খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে ফেরেন হুইলচেয়ারে। তখন থেকেই আবাসস্থল ফিরোজা এবং হাসপাতাল এভারকেয়ারে যাওয়া-আসা অনেকটা নিয়মিত হয়ে ওঠে। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে ছয়বার আবেদন করা হয় বিদেশ চিকিৎসার জন্য। দলীয়ভাবে কর্মসূচিরও আয়োজন করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। কিন্তু কোনো কিছুই টলাতে পারেনি তখনকার সরকারকে।
৫ আগস্ট গণঅভুত্থানের পর মুক্ত হন খালেদা জিয়া। আইনি প্রক্রিয়ায় তার সাজা বাতিল করেন আদালত। তখন থেকেই কথা হচ্ছিল, এখন আর কেন দেরি করা হচ্ছে বিদেশে চিকিৎসার জন্য। জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার জন্য তার শারীরিক অবস্থাসহ নানা প্রস্তুতি নিতে লেগেছে অনেক সময়।
অবশেষে আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। সেখান থেকেই, খালেদা জিয়া সরাসরি যাবেন লন্ডন ক্লিনিকে। প্রায় ৭ বছর পর চিকিৎসার জন্য সফরে গিয়ে আবার দেখা হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জিয়া পরিবারের মা-ছেলের। কারাবন্দি হওয়ার আগে সবশেষ ২০১৭ সালে লন্ডন সফরে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। তখনই শেষবার সরাসরি দেখা হয়েছিল মা-ছেলের।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরবেন। আবারও এগিয়ে নেবেন সবকিছু- এমন প্রত্যাশায় বুক বেধে আছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের লাখো কর্মী-সমর্থক।