ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আম্বেদকর-মন্তব্য ঘিরে দেশটির সংসদে সরকার ও বিরোধীপক্ষের সংঘাত এবার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ধ্বস্তাধস্তিতে আহত হলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুই সাংসদ প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী ও মুকেশ রাজপুত। আর এতে অভিযোগের আঙুল উঠেছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির দিকে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংসদের বাইরে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও বিজেপি সাংসদদের মধ্যে তীব্র ধাক্কাধাক্কি হয়। সংঘর্ষে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গী মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন। এছাড়া, আরেক আহত বিজেপি সাংসদ মুকেশ রাজপুতকেও আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, রাহুল গান্ধির আঘাতেই তাদের দলের এমপিরা আহত হয়েছেন। বিজেপি সরকারের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু বলেন, কী করে তিনি (রাহুল) সংসদে শক্তি প্রয়োগ করতে পারেন। কোন আইন তাকে এমপিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ক্ষমতা দিয়েছে?
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়– ভারতীয় সংসদের বাইরে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গী মাথায় আঘাত পেয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকেন। এসময় রাহুল গান্ধি তার কাছে গিয়ে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজেপি সাংসদরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।
তখন বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে রাহুলকে উদ্দেশ করে বলেন– ‘রাহুল, আপনার কি লজ্জা করে না? আপনি এখানে গুন্ডামি করছেন! একজন বৃদ্ধ লোককে (প্রতাপ সারাঙ্গী) ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন!
ঘটনার পর রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সাংসদরা তাকে ধাক্কা মেরেছেন এবং সংসদ ভবনে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন।
এই ঘটনার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে এজাহার (এফআইআর) করেছে বিজেপি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনে গিয়ে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর, বাঁশুরি স্বরাজ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকেই অমিত শাহর বিরুদ্ধে আম্বেদকর-অবমাননার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কংগ্রেসসহ বিরোধীরা। আজ লোকসভায় সেই বিক্ষোভ ঘিরেই চলে এই তুলকালাম।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস ও তার দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বজরং দলের। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন মোতাবেক, সেই সময়ে বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন সারাঙ্গী। তার বিরুদ্ধেও খুনের মামলা হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত দারা সিংহের যাবজ্জীবন জেল হলেও বিচারে রেহাই পেয়ে যান সারাঙ্গী।