গোলাম মুক্তাদির সবুজ, দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধি: শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসে হেমন্ত। কিন্তু বাংলার প্রকৃতি বৈচিত্র্য এখন হেমন্তের শেষের দিকে হলেও শীতের তীব্রতা পুরোদমে দেখা যাচ্ছে না দুপচাঁচিয়ায়। এরমধ্যে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় শীতের শুরুতেই লেপ তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।আর অল্প কিছুদিনের পর জেগে বসবে তীব্র শীত। তবে এবার কনকনে শীতের আমেজ টের পাওয়ার আগেই লেপ তোশকের দোকানে ভিড় জমতে শুরু করেছেন অনেকে। তবে তুলা, লেপের কাপড়, ফোমের দাম ও মজুরি গত বছরের তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। শীতের মৌসুম এলেই লেপ ভোরার চিত্র ধরা দেয় গ্রাম বাংলার বাড়িতে ও দোকানগুলোতে। সারা বছর কম বেশী তোষকের চাহিদা থাকলেও শীতকালে লেপের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কেউ পুরানো লেপ তোষক ঠিক করার জন্য অর্ডার দিচ্ছেন কেউ বা নতুন করে লেপ তোষক তৈরি করে নিচ্ছেন। কেউ নিজের পরিবারের জন্য আবার কেউ নতুন জামাই বাড়িতে লেপ তোষক পাঠাতে। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। অপর দিকে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের লক্ষ্য করা যাচ্ছে উপজেলার স্থায়ী বড়-বড় কাপড়ের দোকান গুলোতে কম্বল কিনতে।কাজের ব্যস্ততার পাশাপাশি শীত মৌসুমে আয়ও বেড়ে যায় কারিগরদের। অধীর আগ্রহ নিয়ে বছরের এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন কারিগররা। বছরের অন্যান্য সময় প্রতিদিন দুই থেকে তিন টি লেপ তোষক অর্ডার থাকে। কিন্তু শীত মৌসুতে ৫থেকে ৮টি অর্ডার থাকে। এদিকে গ্রামের নারীও বসে নেই। পরিবারের কাজের ফাঁকে পুরানো কাপড়ের পাশাপাশি ছেড়া জামা-কাপড়, লুঙ্গি-শাড়ি দিয়ে তৈরি করছেন নতুন কাথা ও লেপ তোষক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপচাঁচিয়ায় প্রায় ১০ থেকে ১৫টি লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রেডিমেড ও অর্ডার দিলে নতুন লেপ তোশক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন।
কারিগর গোলাম সানজানি বলেন, আমি প্রায় ৪০বছর ধরে এ কাজ করছি। এখনো সারাদিন লেপ বানাতে হয়। কয়দিন আগেও এত ব্যস্ত ছিলাম না।শীতের সময় কাজের চাপ একটু বাড়ে তাই রাতেও কাজ করতে হচ্ছে। যে পারিশ্রমিক পায় তা দিয়ে আমাদের সংসার ভালোভাবে চলে যায়।
ক্রেতা এম ডি শিমুল বলেন,আমি জামাইয়ের জন্য একটা তোষক ও বালিশ কিনলাম প্রয়োজনীয় তুলনায় দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।
সিয়াম বেডিং স্টোর এর স্বত্বাধিকারী লেপ তোষক ব্যবসায়ী সেলিম শেখ জানান, এ ব্যবসা আমাদের পূর্ব পুরুষরাও করে গেছেন। আমি প্রায় ৩৪বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সারা বছর একটু কম আয় হলেও শীতের সময় আমাদের আয় ভালো হয়। তিনি জানান, কাপড়, সুতা,তুলা ও ফোমের দাম বেশি হওয়ায় লেপ ও তোষক তৈরি করতে খরচ এখন অনেক বেশি হয়। ভালো মানের লেপ ১হাজার ৫’শ থেকে ৩হাজার পর্যন্ত বেচা-কেনা হয়। মাঝারী মানের লেপ ১হাজার থেকে ১হাজার ৫'শ টাকা, ছোট আকারের লেপ ৫’শ থেকে ১হাজার টাকা বেচা-কেনা হয়। একটি বড় লেপ তৈরি করতে ৩/৪ঘণ্টা সময় লাগে কারিগরদের।