আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরের আবাদপুকুর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার একাধিক অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অধ্যক্ষ জিমএম মাসুদ রানা জুয়েলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করে সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে চিঠি প্রদান করেছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমিন।
বরখাস্তের চিঠি সূত্রে জানা যায়, রাণীনগর উপজেলাধীন আবাদপুকুর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জনাব জি. এম. মাসুদ রানা জুয়েলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে দাখিলকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্ত অন্তে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী (নিম্নমাধ্যমিক,মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪ এর ৫৪ নং অনুচ্ছেদ এর ১-৬ নং উপ-অনুচ্ছেদের নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৮ নভেম্বর তারিখে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
জানা যায়, আবাদপুকুর মহাবিদ্যালয়ে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পর্যায়ের চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ জিএম মাসুদ রানা জুয়েল ও সদ্যবিদায়ী সভাপতি ও সাবেক কালিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু। এছাড়াও তারা দুইজন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় গত ২৪ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের নিয়োগ ও কলেজ ফান্ডের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল।
অভিযোগে আরো বলা হয়, কোন কোন পদে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে আগের প্রার্থীকে বাদ দিয়ে নতুন করে বেশি অর্থ নিয়ে চাকরি প্রদান করেছেন। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে তদন্ত করে তদন্ত কমিটি তার সত্যতা পায়।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ মাসুদ রানা জুয়েলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাইমেনা শারমীন বলেন, পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটিদের প্রতিবেদনে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়ায় বিধিমতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।