সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আগৈলঝাড়ায় স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে স্ত্রীর মৃত্যু। জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষে গাইবান্ধায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় দুপচাঁচিয়া উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত সাহিত্য প্রেমী ও দক্ষ সংগঠক সিরাজুল হক মন্টুর গল্প নন্দীগ্রামে চালককে মারপিট করে ইজিবাইক ছিনতাই সান্তাহার প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটিকে সংবর্ধনা প্রদান বাগেরহাটে অস্ত্রসহ ৩ ডাকাত গ্রেফতার বাগেরহাটে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ইমামদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, বাগেরহাটে অতিরিক্ত আইজিপি খোন্দকার রফিকুল

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুপচাঁচিয়ায় খেজুর গাছ থেকে পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু হয়নি

গোলাম মুক্তাদির সবুজ দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬১

গোলাম মুক্তাদির সবুজ, দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাল্টে গেছে ঋতু পরিবর্তনের আবহমান কালের পারুলিপি। শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসে হেমন্ত। কিন্তু বাংলার প্রকৃতির ঋতু বৈচিত্র্য এখন হেমন্তর মাঝামাঝি হলেও গাছিরা কেবল মাত্র খেজুর গাছের ছাল(চাঁচ) দিচ্ছে। অগ্রহায়ণ মাস শুরু হলেও গাছ থেকে পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু হয়নি।আগে ভাদ্র ও আশ্বিনে খেজুর গাছের চাঁচ শুরু করতো তারা। গাছিরা জানান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে এবং আগের মতো আর রস সংগ্রহ হয় না।ভোর আর সন্ধ্যায় গ্রামাঞ্চলে হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সকাল ও সন্ধ্যায় শীত শীত মিষ্টি অনুভূতি হতে শুরু করেছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের জন্য চলতি মৌসুমে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। গাছিরা বছরজুরে অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকলেও বর্তমানে খেজুর গাছের রস ঘরে আনার জন্য ব্যস্ততায় দিন কাটাছে। এ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বাড়ির আঙিনায়, ঝোপ ঝাপে, জমির আইলে, রাস্তার দুপাশে রয়েছে খেজুর গাছ। প্রতিবছরে ন্যায় এ বছরও মৌসুমী গাছারিরা কোমরের দড়ি বেঁধে খেজুরগাছে ওঠে তাদের নিপুন হাতে গাছের ছাল(চাঁচ) তুলছে।পরে নলি বসানোর কাজ শেষে রস সংগ্রহ করবে। ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করা হয়, যাকে বলে চাঁচ দেওয়া। উপজেলার দুইটি পৌরসাভা এবং ছয়টি ইউনিয়নে এক সময় অসংখ্যক খেজুর গাছ ছিল এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সরকারি খেজুর গাছের সংখ্যা হতে গুনা। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটি গাছ থেকে আগে ৫থেকে ৮লিটার পর্যন্ত রস সংগ্রহ করতো এখন সেখানে ২থেকে ৪লিটার পর্যন্ত সম্ভব হয়।খেজুর গাছ একবার চাঁচ দিলে তিন-চার দিন রস সংগ্রহ করা যায়। তারপর তিনদিন গাছ শুকাতে হয়। শুকনো গাছের রস সুমিষ্ট হয়। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত যেন বাড়ে। আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে মানুষদের শীতের সকালের নাস্তাতে মুড়ির সাথে রস না হলে যেন চলে না। শীতকালীন পিঠাপুলি, পায়েস সহ রকমারি খাবার তৈরীতে রস ও খেজুরগুড়ের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। গাছিরা খেজুরের লালিগুড় তৈরী ছাড়াও পাটা গুড়, বাটি গুড় এবং রস প্রিয়সী মানুষদের জন্য ফেরী করে রস বিক্রয় করে। দেশজুড়ে খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় গাছিরা বাড়ি থেকেই খুরচা ও পাইকারী গুড় বিক্রয় করে সময় ও অর্থ দুটোই লাভবান হন এ অঞ্চলের গাছিরা। তবে গাছিদের অভিযোগ খেজুর গুড় সংরক্ষনের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় বেশি দিন বাড়িতে রাখা যায় না। এলাকার সচেতন মহল ও গাছিরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ,কালের বিবর্তনে, বনবিভাগের নজরদারি না থাকায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্য খেজুর গাছ। দুপচাঁচিয়া চামরুল ইউনিয়নের কোলগ্রামের গাছি ফেরদৌস বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমি একাজ করছি। চলতি মৌসুমে ৫০টি মতো গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করেছি। চুক্তিতে অন্যের গাছ এবং রাড়ার দুপাশে সরকারি গাছ থেকে আমি রস সংগ্রহ করে থাকি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগের মত এখন আর রস হয় না তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে পর্যাপ্ত পরিমানে গুড় উৎপাদন সম্ভব।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com