মোঃ মাহমুদুল হাবিব রিপন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি গাইবান্ধা সদর উপজেলার মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রান্তিক চাষিরা শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। টানা বৃষ্টির পর জমির মাটি উর্বর থাকায় আগাম সবজি চাষ শুরু করেছেন অনেকে। ইতোমধ্যে এসব সবজি বাজারের অনেকটা চাহিদা পূরণ করতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। উপজেলার লক্ষীপুর, মালিবাড়ী, কুপতলা, সাহাপাড়া, বল্লমঝাড়, রামচন্দ্রপুর, বাদিয়াখালী, বোয়ালী, খোলাহাটি, ঘাগোয়া, গিদারী, কামারজানী, মোল্লারচর পৌরসভাসহ
সব ইউনিয়নে আগাম শীতকালীন শাক-সবজির ফলন করেছেন কৃষক ।
সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, বেগুন, লাউ, পটল, বরবটি, পালন শাক, লাল শাক মুলাশাকসহ বিভিন্ন আগাম শীতকালীন শাক-সবজি মাঠে চাষ হচ্ছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে , বৃষ্টিতে ভিজে অনেকেই সবজির ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ অঞ্চলের মাঠে প্রায় সারা বছরই সবজি চাষ হয়ে থাকে। এ কারণে এই এলাকাকে সবজি নগরী বলা হয়।
কুপতলা ইউনিয়নে-ফকিরপাড়া, বেড়াডাঙ্গা।
মালিবাড়ি ইউনিয়নে- কিশামত মালিবাড়ী, ধর্মপুর, কচুয়ার খামার
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে- মৌজামালিবাড়ি, খোর্দ মালিবাড়ী, গোবিন্দপুর।
বোয়ালী ইউনিয়নে – পশ্চিম পেয়ারাপুর, বোয়ালী হাঁসগাড়ি।
বল্লমঝাড় ইউনিয়নে- রঘুনাথপুর, ইসলামপুর, মধুপুর এসব অঞ্চলে শীতকালীন সবজির মধ্যে মূলা, পালংশাক, লালশাক, লাউ, শিম, করলা, পুইশাকসহ বিভিন্ন শাক ও সবজি চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা।
খোর্দ মালিবাড়ী এলাকার কৃষক হামিদ বলেন, আগে আমি ২ বিগা জমিতে বেগুনের চাষ করতাম শীতের সময় তখন লস হতো। এরপর আমি কৃষি অফিসারদের মাধ্যমে শীতকালীন বিভিন্ন সবজি সম্পর্কে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে জানতে পার- লাম। তারপর থেকে আমি আগাম শীতকালীন সবজি বেগুনের চাষ করি, এখন আমার চাষে খরচ এবং পরিশ্রম একটু কম হয়। তবে সময়ের চেয়ে অসময়ে বেগুন বিক্রি করে বেশি লাভ বেশি পাওয়া যায়। তাই আমি বেগুন চাষ করি। উপজেলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে চাষীদের সঙ্গে কথা বললে তারা সকলেই বলেন, এ সময়ে আগাম শাক-সবজি চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে বাজারে দামও বেশি। তাই সবজি চাষ করে আমরা অনেক লাভবান ও স্বাবলম্বী হয়েছি।
কৃষক মধুমিয়া বলেন,ভালো দামের আশায় আগাম এই শীতকালীন সবজি গুলো চাষ করা হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফা বৃষ্টিতে জমিতে রস পেয়ে সবজির চেহারা গুলোর অনেক সুন্দর হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সবজির বাম্পার ফলন হবে বলেন তিনি আশা করছেন।
সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সাহাদৎ হোসেন জানান, আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, ভালো লাভ হওয়ায় প্রতি বছরই আগাম শাক-সবজি করেন তারা। এতে আরও অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।
বর্ষাকালের অন্যতম ফসল সবজি। শীত মৌসুমেই শাক-সবজির উৎপাদন হয় বেশি। খরিপ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১৬৬ হেক্টর। অর্জন হয় ২১৬৬ হেক্টর,২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ২৫০০হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আগাম সবজি চারা রোপণের ঠিক আগ মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে সময় মত জো এসেছে। এবছর আবহাওয়া ও অনুকূলে রয়েছে। এখন সময় মত রোপণ করতে পারলেই ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পেয়েও কৃষকরা লাভবান হবে বলে তিনি আশা করছেন।