এ এইচ নান্টু, বাগেরহাট প্রতিনিধি || বাগেরহাটের রামপালে মাদক বেচাকেনা কে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারে হামলায় ৩ যুবক আহত হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মাদক বেচাকেনা সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের বেলাই এলাকার মো. মিজানুর রহমান খোকনের ছেলে জনির সাথে দীর্ঘ দিনধরে বিরোধ চলে আসছিল তার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ভ্যাকোটমারীর রনি শেখ (২৫), সিদামখালী গ্রামের মো. রাজু সরদার (২৮) ও একই গ্রামের মাসুম মল্লিকের সাথে। বিগত সময়ে তারা একসাথে চলাফেরা করতো। গত আওয়ামী লীগের আমলে তারা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরে ওই সিন্ডিকেট উপজেলা বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হওয়ার চেষ্টা করে। তারা তাদের শক্তিমত্তা জানান দিতে নিজেদের দলের প্রতিপক্ষের লোকজনের উপর হামলা করে।
ঘটনার দিন গত ইং ৪ অক্টোবর শুক্রবার রাত ৯ টার সময় উপজেলার বাবুর বাড়ী এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল রনি, রাজু ও মাসুম। এ সময় জনিসহ তার বাহিনীর সদস্যরা তাদের গতিরোধ করে উপুর্যপুরি কুপিয়ে আহত করে। আহতদের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে রামপাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে একটি সিন্ডিকেট জনপ্রিয় বিএনপি নেতা হাওলাদার বাবুল হোসেনের নাম পেঁচিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দের নামে কালিমা লেপন করার অপচেষ্টা চালায়। বিষয়টি নিয়ে নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভুল বার্তা দেয়া হয়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসীর অনুরোধ বিষয়টি অনুসন্ধানে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলে।
মার্ডার মামলাসহ বহু মামলার আসামী রূপসার আলোচিত সন্ত্রাসী র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত নৈহাটির আওয়ামী যুবলীগ নেতা কামালের সহযোগী ছিল এই জনি। সে হত্যা মামলাসহ বহু মামলার আসামী। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জনি যুবলীগের সাথে মিশে মাদক সম্রাজ্য গড়ে তোলে। তারা মোংলা বন্দরের আশপাশে ও রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাছে তাদের আস্তানা গড়ে তোলে। মাদক বেচাকেনার টাকার হিসাব না দিলে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরেই এমন হামলার ঘটনা ঘটে।
রনির মাতা রেক্সনা বেগম ইউনিয়ন মহিলা লীগের সহসভাপতি। মাসুমের পিতা ইউনুস মল্লিক ছিলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। রাজু গত পূজায় বিএনপির লোকজনকে মারপিট করে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজু ও রনি হুড়কা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তপন গোলদারের দেহরক্ষী ছিল। এরা লিটন নামের এক ডিস ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। এতসব অভিযোগের পরেও জনি ও তার সহযোগীরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিএনপির নেতাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে, উপজেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনি, রাজু, মামুম ছাত্রদলের কেউ না। তাদের নাম কোন কমিটিতে নেই। খোলস পাল্টে বিএনপি বা ছাত্রদলের নাম ভাঙ্গাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে রাজু, রনি ও মাসুমের কাছে জানতে চাইলে তারা দল ছাত্রদল করেন বলে দাবী করলেও কোন পদে আছেন সেটি দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে রামপাল থানার ওসি সোমেন দাশের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।#