দিনভর নানান নাটকীয়তার পর অবশেষে লাহোরে সমাবেশের অনুমতি পেলো পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে দলটিকে ৪৩টি শর্তে এই অনুমতি দেয়া হয়।
দ্য ডনের খবর অনুযায়ী, শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত পিটিআইকে লাহোরের রিং রোডের কানহা এলাকায় একটি সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে লাহোর প্রশাসন। তবে এই জন্য ৪৩টি শর্ত মেনে চলতে হবে।
দিনব্যাপী নাটকটি মূলত উন্মোচিত হয় যখন পাঞ্জাব বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা মালিক আহমদ খান ভাচা পিটিআই এমপিএদের সঙ্গে নিয়ে মিনার-ই-পাকিস্তান সাইটটি পরিদর্শন করতে যান। সেখানে পুলিশ তাদের প্রবেশে বাধা দেয়।
এরপর এক আইনজীবী পিটিআইকে সমাবেশের অনুমতি না দিতে লাহোর হাইকোর্টে আবেদন করেন। যদিও সে আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।
তাছাড়া সমাবেশের অনুমতি দিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় পিটিআই। দলটির নেতা আলিয়া হামজা ও অন্যান্য নেতারা সমাবেশের অনুমতির জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ চান।
এরপর আদালত আইন অনুযায়ী ডেপুটি কমিশনারকে পিটিআইয়ের অনুরোধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
যদিও অনুমতি পাওয়ার পর শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। সমাবেশে যাতে পিটিআই সমর্থকরা আসতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এনওসি-তে বলা হয়েছে, সমাবেশে অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা ঘটলে দায় নেবে আয়োজকরা। ৪৩টি শর্তের তৃতীয় নম্বর শর্তে বলা আছে গত ৮ সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদের সমাবেশে দেয়া আপত্তিকর ভাষণের জন্য খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গণ্ডাপুরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
তারা আরও উল্লেখ করেছে যে শহরের বাইরে থেকে সমর্থকরা এসে দৈনন্দিন জীবনের বিঘ্ন ঘটাবে না এবং কোনো ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেয়া যাবে না।
শর্তগুলোতে আরও বলা হয়েছে, যারা ইসলামাবাদ সমাবেশে ঘৃণামূলক বক্তব্যের জন্য বিচারাধীন রয়েছেন তারা মঞ্চে উপস্থিত হতে পারবেন না এবং কোনো ঘোষিত অপরাধী সমাবেশে অংশ নিতে পারবেন না। এ ছাড়া ঘোষিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা সমাবেশ আয়োজকদের দায়িত্ব হবে। অন্যথায় তাদের ওই অপরাধীদের সহায়তা করার জন্য বিচার করা হবে। এমনকি ঘোষিত অপরাধী বা কোনো দণ্ডিত ব্যক্তির অডিও বা ভিডিও বার্তা প্রচার বা প্রদর্শন করা যাবে না।
এনওসি-তে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন পক্ষ থেকে প্রাপ্ত হুমকি সতর্কতার প্রেক্ষাপটে আয়োজকদের পুনরায় সতর্ক করা হচ্ছে এবং অংশগ্রহণকারী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য ভেন্যুর আশপাশে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কারণ এই জনসভা তারা নিজেরা ডেকেছে।