এ এইচ নান্টু, বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের রামপালে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অসহায় দম্পতির জমি জবরদখল চেষ্টা ও মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃদ্ধা মহিলা প্রতিকার চেয়ে রামপাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগের সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মল্লিকেরবেড় গ্রামের কালাম খাঁর স্ত্রী কহিনুর বেগম জমি ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ওই জমি দাবী করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসূল হাদির নেতৃত্বে গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ৮ টায় একই গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে মো. মশিউর শেখ, আমীনুর শেখ, মো. তৌহিদুর রহমান শেখ, মিজানুরের ছেলে মো. শাওন শেখ, সাখাওয়াত খাঁনের ছেলে মো. মোশারেফ খাঁন, সোহেল খাঁন, মোশারেফ খাঁনের ছেলে মো. রমজান খাঁন, সৈয়দ আলী খাঁনের ছেলে মো. রবিউল খাঁন, মো. মশিউর শেখের ছেলে মো. রিয়াদ শেখ ও মো. জিহাদ শেখ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অসহায় ওই বৃদ্ধার জমি জোরপূর্বক গড়াবেড়া দিয়ে জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে।
কহিনুরের স্বামী কালাম খাঁ বাঁধা দিতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে আহত করে। তাদের প্রতিবন্ধী ছেলে সবুজ কেও বেধড়ক মারপিট করে। ওই সময় অসহায় ওই দম্পতিকে ভয়ভীতি ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে ওই দখলবাজেরা।
উল্লেখ্য, ওই জমি নিয়ে মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের ১ নং ইউপি সদস্যদ মো. ইকবাল হোসেন ও ৫নং ইউপি সদস্য মো. মতিয়ার রহমান খাঁন গত ৫ মার্চ ২০২৪ তারিখ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সসমন্বয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে একটি শান্তিপূর্ণ শালিস করা হয়। ওই শালিসনামায় ১৫০ নং মল্লিকেরবেড় মৌজার এসএ ৮৪ খতিয়ানের ৭১৩ দাগসহ আরো ৫ টি, যার মোট জমি ১.৭৫ একর। ৯ জন শালিসদারের পক্ষদ্বয়ের বিরোধী জমি সংক্রান্ত দলিলসহ রেকর্ডীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ৮৪ নং খতিয়ানের ৩০ মার্চ ১৯৬৩ সালে ৯০৮ নং কবলা দলিলে আ. মান্নান শেখ ০.১৬৫০ একর সম্পত্তি প্রাপ্ত হন। যা তিনি বড় সন্ন্যাসীর আবুল কালাম খাঁ দিং এর নিকট উক্ত ০.১৬৫০ একর সম্পত্তি ১১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯০ সালে বিক্রয় করেন। যার কবলা দলিল নং ৩৬৭। এরপর থেকে তিনি ওই সম্পত্তিতে বসতি ঘর, মুল্যবান গাছপালা ও পুকুর খনন করে বসবাস করে আসছেন। চলমান জরিপে আবুল কালাম খাঁ দিংদের নিজ নামে রেকর্ড করেছেন। যার খতিয়ান নং ডিপি ৯৭ দাগ নং ৭১৩/২০২১।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মো. মশিউর শেখ ও ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসূল হাদিসহ সবাই সাংবাদিকদের জানান, আমরা অন্য কারো জমি দখল বা মারপিট করিনি। যারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে মূলত তারাই জোরপূর্বক আমাদের জমি দখল করে রেখেছে। আপনারা কাগজপত্র দেখে জমি না পেলে আমাদের কোনো দাবী নেই।
এবিষয়ে রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশ জানান, জমি দখল নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যায় বা জোরপূর্বক কারো কোন সম্পত্তি ভোগদখল করার সুযোগ নেই।