ভিয়েতনামে টাইফুন ইয়াগির আঘাত এবং তার জেরে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া- প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানে সুপার টাইফুন ইয়াগি। এই ঘূর্ণিঝড়কে চলতি বছর এশিয়ায় আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলা হচ্ছে।
দেশটির দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৮২০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও ৮২ জন।
প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ লাও কাইয়ের নু গ্রামের ৩৭টি বাড়ি ভেসে যাওয়ার পর থেকে কর্তৃপক্ষ এখনও ৪১ জনের খোঁজে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
লাও কাইয়ের অন্য একটি গ্রামে এর আগে ১১৫ জন নিখোঁজ হয় বলে জানা যায়। কিন্তু দুইদিন ধরে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর তারা নিরাপদে ফিরে এসেছেন বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে।
এদিকে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারেও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বন্যার কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে বিদেশি সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। বন্যায় যেসব এলাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানী নেইপিদো।
দেশটির সামরিক বাহিনী বলছে, বন্যায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় দৈনিক নিউ লাইট বলছে, গৃহহীনদের জন্য কিছু অস্থায়ী ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। মিয়ানমার ও ভিয়েতনামে আঘাত হানার আগে চীনের হাইনান এবং ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে টাইফুন এবং হারিকেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, তিন বছরের গৃহযুদ্ধে মিয়ানমারের বেশিরভাগ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ২৬ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।