বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি প্রশ্নের সম্মুখীন হলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, তারা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে কাজ করেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়। সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বেয়ারবকও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজ দেশে প্রত্যর্পণ করা হবে কি না, তা জানতে চান। ওই সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে বলে জানিয়েছে। এমন অনুরোধ ভারত কি বিবেচনা করবে?
জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশে সরকারে পরিবর্তন হয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। আর এটা আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে করি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়।
ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেছিলেন, ‘‘শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কারণ বিচার করার জন্য আমরা তাকে ফেরত আনতে চাই। তিনি ভারতে রয়েছেন এবং সেখান থেকেই মাঝে মাঝে কথা বলছেন। এটা সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা ভুলে যেতাম। মানুষও এটা ভুলে যেত, যদি তিনি নিজের জগতেই থাকতেন। কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলছেন এবং দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন, কেউই এটা পছন্দ করছে না।’’
আরও পড়ুন
শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে ভারত? কী আছে ঢাকা-দিল্লির চুক্তিতে
তবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের সম্ভাব্য কোনও অনুরোধ ভারত বিবেচনা করবে কি না, সেই বিষয়ে দেশটি এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনও অবস্থান জানায়নি। কূটনৈতিক স্তরে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ড. ইউনূসের সর্বশেষ মন্তব্যের জবাবও দেয়নি দিল্লি।