সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের “সর্বাত্মক অসহযোগ” কর্মসূচির প্রথম দিনে পাবনায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘের্ষ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে শহরের আব্দুল হামিদ রোডের ট্রাফিক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীরা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের জেবি মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পেছন থেকে অতর্কিত গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (১৯), মাহবুুবুল হোসেন (১৬) ও ফাহিম (১৭) নিহত হন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়লে কিছু সময়ের জন্য সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মৃত্যুর খবর শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন ও স্লোগানে দিতে থাকেন। দফায় দফায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে বলে জেনেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের আমরা দ্রুত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। হাসপাতালে তিনজন মারা গেছেন।
তারা আরও জানান, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক ও তার লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দেয়। তারা পিছু হটলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা যুবলীগের ওই নেতার অফিস ভাঙচুর করে। এছাড়া তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনার পর দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ চেয়ারম্যান ও তার লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায়। পরে শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাঈদ চেয়ারম্যানের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আগুন পাশের একটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।