গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ(এলএসডি) একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় পশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে । এ রোগ সাধারণত কম বয়সী হৃষ্টপুষ্ট বাছুর গরু বেশি আক্রান্ত হয়। তবে মহিষ ও ছাগলও আক্রান্ত হতে পারে। আমাদের দেশে ২০১৯ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম এলএসডি রোগটি দেখা দেয়। পরবর্তী ২-৩ মাসের মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে এ রোগটি প্রতিবছরে এসময় বর্ষা মৌসুমে প্রতিফলন হয়।
এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এইরোগ গবাদিপশুকে আক্রান্ত হওয়ায়, আতংকিত হয়ে পড়েছেন পশুর মালিকরা।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পলাশবাড়ি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ তিনি দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রাকে জানান,পশুর পালনকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা,লিফলেট বিতরণসহ পশুদের টীকাপ্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন,যেহেতু রোগটি বর্ষাকালে হয় তাই গরুর ঘরের আদ্রতা , পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিকার সব সময় অধিক গুরুত্বপূর্ণ । তাই সকল পশুপালনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন
খামারের ভেতরসহ আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যেন মশা-মাছির উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এবিষয়ে আক্রান্ত গরুকে মশাড়ি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, মশা-মাছি যেন কামড়াতে না পারে।
কারণ আক্রান্ত গরুকে কামড়ানো মশা-মাছি সুষ্ঠু গরুকে কামড়ালে এই রোগের সংক্রমণ হতে পারে।বর্তমান সময়ে এটি একটি আলোচিত রোগ হলেও খামারিদের আতংকিত না হয়ে ধৈর্য ধারন করে। বাড়িতে নিজেরাই কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারেন। কারন ঘরোয়া চিকিৎসাতেই বেশির ভাগ আক্রান্ত গরু ভালো হয়ে যায। এরোগ দেখা দিলে প্রাথমিক অবস্থায় প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ, নিম পাতার রস,খাওয়ার সোডা,সাথে জিংক ও আয়রণ দিলে গরু দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে। প্রাথমিক অবস্থায় কোন এন্টিবায়োটিক দেয়ার প্রয়োজন নেই।যখন ফোস্কা বা গুটি গুলো ফেটে গিয়ে ঘাঁ দেখা দিবে তখনই কেবল এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।এছাড়া এলএসডি প্রতিরোধের জন্য গবাদিপশুকে সুস্থ অবস্থায় ভ্যাকসিন দিতে হবে।লাম্পি স্কিন ডিজিজ বা এল এস ডি এর ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশে প্রয়োগে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে।
এ পর্যন্ত পলাশবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ,উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভা করেন- ৫ টি এবং টিকাপ্রদান কর্মসূচিতে ৪ টি কেন্দ্রে করে-৪০০ টি পশুকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলার খামারি ও পশুপালনকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক লিফলেট বিতরণ করেন ৩ হাজার ২শত জনকে। পাশাপাশি যারা লাম্পি স্কিন ডিজিজ(এলএসডি) পশু নিয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে আসে তাদেরকে উন্নত মানের চিকিৎসাসহ এ বিষয়ে যথাযথ খামার ব্যবস্থাপনা বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে এবং পশুর সব ধরনের রোগের চিকিৎসার চলমান রয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..