বগুড়ায় বিএনপি’র দু’টি কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরই শহরের টেম্পল রোডে বিএনপির পৌর কমিটির কার্যালয় এবং নওয়াববাড়ি সড়কে দলটির জেলা কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বিএনপি’র পক্ষ থেকে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগকে দায়ী করা হয়েছে। বগুড়া জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনার অভিযোগ, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের কাছে পরাজিত যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে।
তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বলেন, আজ (মঙ্গলবার) আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে বিএনপি অফিসে কে বা কারা আগুন দিয়েছে সেটি আমরা জানি না।সোমবার ঢাকায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল ও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনে সড়ক অবরোধ করা হয়।
সকাল ১১টার দিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজের নতুন ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ শেষ হওয়ার পর পরই দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ৪ শিক্ষার্থী আহত হন। এর পর বেলা ৩টার দিকে কোটা বিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় অবস্থান নিতে গেলে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
সেখানেও বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা পিছু হটে।এরপর কোটা বিরোধীরা জিরো পয়েন্ট সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে তারা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অস্থায়ী পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়েও ভাংচুর চালিয়ে আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাশে আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খান রনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাংচুর এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ইট-পাটকেলের আঘাতে অন্তত ৫জন সাংবাদিক আহত হন। দীর্ঘ প্রায় ৩ ঘন্টা সাতমাথায় অবস্থান শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে কোটা বিরোধীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর পর পরই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় অবস্থান নেয় এবং মিছিল করে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে একদল যুবক টেম্পল রোডে বিএনপির শহর কমিটির কার্যালয়ে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে।
পরে তারা নওয়াববাড়ি সড়কে দলটির জেলা কার্যালয়েও অগ্নিসংযোগ করে। বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার অভিযোগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপি কার্যালয় ছাড়াও শ্রমিক দল এবং ছাত্রদল কার্যালয়েও আগুন দিয়েছে। তিনি বলেন, এই হামলা কাপুরোষোচিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূল শাস্তির দাবি করছি।