মুক্তার শেখ, বগুড়া
বগুড়া শহরের নারুলী এলাকা থেকে রহস্যজনকভাবে একই পরিবারের নিখোঁজ সাতজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সোমবার রাঙামাটি জেলার সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পাড়া এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। পিবিআই এর দাবি, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আয় রোজগার করে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার উদ্দেশ্য কাউকে না জানিয়ে রাঙামাটি জেলায় চলে গিয়েছিল তারা।
উদ্ধার সাতজন হলেন- লালমনিরহাটের খোচাবাড়ি এলাকার ফাতেমা বেগম, তার ছেলে বিক্রম আলী, ছোট মেয়ে রুনা খাতুন, বড় মেয়ে রুমি বেগম, তার নাতনী বৃষ্টি খাতুন এবং যমজ নাতি হাসান ও হোসেন। তবে তারা গত ১০ বছর ধরে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়ার পিবিআই কার্যালয়ে ইন্সপেক্টর জাহিদ হোসেন মন্ডল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
এর আগে, গত ৩ জুলাই কাউকে কিছু না জানিয়ে ফাতেমা বেগম তার ছেলে, মেয়ে, নাতী ও নাতনীসহ মোট সাতজন বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তাদের গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটে এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের কাছে খোঁজ করেও তাদের কোনো সন্ধান না পেয়ে ফাতেমার স্বামী আব্দুর রহমান বগুড়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী ( জিডি নং- ৫১০, ৬/৭/২৪) করেন। পরে পিবিআই পুলিশ জিডির সূত্র ধরে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
ইন্সপেক্টর জাহিদ জানান, ফাতেমা ও রুমি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, তাদের স্বামী বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে আয় রোজগার নিয়ে কটু কথা শোনাতো। তাদেরকে স্বাবলম্বী হতেও দিত না। এছাড়াও তাদেরকে মাঝে মধ্যেই মানসিক নির্যাতন চালাতো। এ কারণে তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকলের অগোচরে নিজেরা আয় রোজগার করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে তারা রাঙামাটি জেলার বুড়িরহাট এলাকায় ফাতেমার নানার বাড়ীতে পালিয়ে যায় এবং সেখানে কাজের সন্ধান করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, ফাতেমার পরিবার দরিদ্র। আর ফাতেমা এর আগে অনেকবার রাঙামাটিতে গিয়েছিল। এজন্য সেখানে তার পথঘাট পরিচিত ছিল। এর মধ্যে তিনি সেখানে অনেকের কাজের ব্যবস্থাও করেছিল। রাঙামাটি যাওয়ার পর লালমনিরহাটেও একবার গিয়েছিল ফাতেমা। কিন্তু তাদের স্বামীর নির্যাতনের কারণে তারা কোথায় আছে সেটি গোপন রাখে। আর তাদের মূলত পরিকল্পনাই ছিল রাঙামাটি যেয়ে কাজকর্ম করে সেখানেই স্থানী বাসিন্দা হয়ে বসবাস করার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাদের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।