বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরে বখাটেদের উপদ্রপ আবারো বেড়েছে। তারা বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে ছাত্রীদের প্রকাশ্যে প্রেম নিবেদন, মোবাইল ফোনে ছবি ধারণসহ নানা হুমকি প্রদান করায় ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। গতকাল মঙ্গরবার ( ৪জুন) বেলা সোয়া ১২ টায় তুচ্ছ ঘটনায় আদমদীঘি কলেজের পার্শ্বের রাস্তায় তালশন গ্রামের খোকন ও শিমুল নামের বখাটে যুবকসহ তাদের সহযোগিরা গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির আফিয়া সুলতানা নামের এক ছাত্রীকে রাস্তায় প্রকাশ্যে এলোপাথারি ভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষক ও পুলিশ অজ্ঞান অবস্থায় ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে আদমদীঘি হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে ছাত্রীর অবস্থার অবনতি হলে নওগাঁ সদর ও শেষে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা আদমদীঘি সদর ইউপির শিবপুর গ্রামে আনজু মনোয়ারা বাদি হয়ে তালশন গ্রামের খোকন, শিমুলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই খোকন ও শিমুল নামের দুইজনকে গ্রেফতার করেছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত ছাত্রীর অবস্থা আশংকাজনক বলে স্বজনরা জানান।
আদমদীঘি উপজেলা সদরের হাসপাতাল সড়ক, বাসস্ট্যান্ড, ক্ষুদ্র মৎস্য বাজার মোড়, দলিল লেখক সমিতি চত্বর, স্টেশন রোড, কালিবাড়ি, পশ্চিম বাজার ব্রিজ চত্বরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে এক শ্রেণির বখাটে যুবকরা স্কুল ও কলেজগামী ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পাথে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে কেউ বা মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে ছাত্রীদের প্রকাশ্যে প্রেম নিবেদন, মোবাইল ফোনে ছবি ধারণসহ নানা হুমকি প্রদান করার ঘটনা আবারো বেড়ে যাওযায় ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছিল। গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী আফিয়া সুলতানা মোবাইল ফোনে একটি মেসেজ দেয়াকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী তালশন গ্রামের একই বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনির ছাত্রী মারজিয়া আক্তার মিষ্টি নামের ছাত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় মিষ্টি নামের ছাত্রীটি তার বাড়িতে খবর দিলে মিষ্টির ভাই খোকন, মা মনজুয়ারারা, শিমুলসহ ৮/১০ জন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে পাশে সমবেত হয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। এদিকে আফিয়া সুলতানা পরীক্ষা শেষে বেলা সোয়া ১২ টায় বাড়ি ফেরার সময় বিদ্যালয়ের পাশে তার পথরোধ করে বখাটে খোকন ও শিমুলসহ অপর আসামীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আফিয়া সুলতানার উপড় হামলা চালিয়ে এলোপাথরি ভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। এসময় শিক্ষক পুলিশসহ স্থানীয়রা অজ্ঞান অবস্থায় আফিয়া সুলতানাকে উদ্ধার করে আদমদীঘি হাসপাতালে ভর্তি করান।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম তালুকদার ঘটনাটি সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় ছাত্রীর অভিভাবক মামলা করেছেন।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আজ বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতার তৎপরতা চলছে।