বাগেরহাটের রামপালে ঘূর্ণি ঝড় রেমালের জলোচ্ছ্বাস ভেসে গেছে মৎস্য খামারের কোটি টাকার কার্প ও চিংড়ির পোনা। সব হারিয়ে এখন পথে বসেছেন উপজেলার শ্রীরম্ভা গ্রামের শেখ ফারদিন মৎস্য খামারের মালিক মিজানুর রহমান মজনু।
উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নসহ আশপাশের খামরগুলোতে কার্প জাতীয় মাছের পোনার বৃহৎ জোগান দেয়া হতো ওই ফারদিন মৎস্য খামার থেকে।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ইং ২৬ মে ঘূর্ণি ঝড় রেমালের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে রামপালের গৌরম্ভা ইউনিয়নের অধিকাংশ মৎস্য ঘের। বাড়ীঘর লণ্ডভণ্ড হওয়ার পাশাপাশি এ এলাকার একমাত্র আয়ের উৎস চিংড়ী খামার ভেসে যায়। শুধু তাই নয় খামারের বেড়ী বাঁধ স্রোতের তোড়ে বিলিন হয়ে যায়। বাদ যায়নি ফারদিনের বেড়ী বাঁধও। খামারের দেখভাল করা রিক্তা বেগম জানান, অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে ধারদেনা করে খামারে প্রায় ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন মালিক মিজানুর রহমান মজনু।
কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় তিনি খামারটি গড়ে তোলেন। ছোট ধানিপোনা কিনে এনে তা খামারে রেখে খাবার দিয়ে বড় করা হয়। এ জন্য সকল প্রকার নিয়ম মেনে নিরাপদ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন ও খাবার দেয়া হয়। রিক্তা বেগম আরো জানান, রুই, কাতল, মৃগেল ও কালিবাউস মাছ ১০/১২ টায় কেজি হলে তা অন্য খামারিদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হটাৎ করে রেমাল আঘাত হানে। সারা বছরের স্বপ্ন ভেসে পানিতে মিশে যায়। সব থেকে বেশী সমস্যা তৈরি হয় তীব্র লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে। অবশিষ্ট মাছে মরে সব ভেসে ওঠে। সরোজমিনে সাংবাদিকরা গিয়ে মৃত মাছের সমাধি ও মরা মাছ ভেসে ওঠার দৃশ্য দেখতে পান।
এ সময় খামারি মজনুর স্ত্রী রিক্তা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, কি করে আমরা বেচে থাকবো ? আমরা সন্তান মরা শোকে পড়েছি। সন্তানের মত মাছেদের খাবার দিতাম। আমার স্বামী ভয়ে এখানে আসছেন না, এলে তিনি স্ট্রোক করবেন। এমন অবস্থা হয়েছে যে বেড়ী বাঁধ দিয়ে নতুন করে পোনা ছাড়ারও সুযোগ নেই। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেন।#