ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে সোমালিয়া উপকূলে নোঙর ফেলা বাংলাদেশি পতাকাবাহী পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহতে এখন সশস্ত্র ১২ জলদস্যু অবস্থান করছে । জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর), যাদের কার্যক্রম অপারেশন আটলান্টা হিসেবে পরিচিত।
তারা বলছে, জিম্মি জাহাজের ভেতরের পরিস্থিতি আগের মতোই একই রকম রয়েছে এবং নাবিক ও ক্রুরা নিরাপদে আছে বলে জানা গেছে।
কিছু আগে এমভি রুয়েন-এর ছিনতাইকারীরাই আবদুল্লাহর ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে এবং এই জলদস্যুরা সোমালিয়ার ভূখণ্ডের তিনটি ক্যাম্প থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অপারেশন আটলান্টার সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, জিম্মি হওয়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজটির ওপর জলদস্যুতার ঘটনার সার্বক্ষণিক নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
কয়লা বোঝাই করে মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন ‘এমভি আবদুল্লাহ’।
সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগরে কয়েকটি স্পিড বোট ও মাছ ধরার বড় নৌকা নিয়ে সশস্ত্র দস্যুরা জাহাজে প্রবেশ করে নিয়ন্ত্রণ নেয়। জিম্মি করে ফেলে এর ২৩ নাবিককে।
অপারেশন আটলান্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাহাজের সংগৃহীত ভিজ্যুয়াল তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সেখানে কমপক্ষে ১২ জন জলদস্যু রয়েছে। ছিনতাইয়ের সময় ছিলো ২০ জনের সশস্ত্র একটি দল।
সোমালি উপকূলের মধ্যবর্তী, উত্তর ও দক্ষিণের এলাকায় জলদস্যু গোষ্ঠীর তিনটি শিবির চিহ্নিত করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে অপারেশন আটলান্টা। আর এসব আস্তানা বা ক্যাম্প থেকেই তারা ছিনতাই অভিযানের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, অপারেশন আটলান্টা বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষসহ অংশীদারদের সাথে ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপের সমন্বয় সাধনের জন্য যোগাযোগ রাখছে।
দস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার সময় এসআর শিপিং কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করেন নাবিকরা। মুক্তিপণ না দিলে দস্যুরা তাদের মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে বলেও জানান।
তবে এখন পর্যন্ত জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিকল্প হিসেবে ‘সেকেন্ড পার্টির’ মাধ্যমে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।
দশ বছর আগেও আরব সাগর থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিলো কবির গ্রুপেরই জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’। নানা দর কষাকষি করে তিন মাস ১০ দিন পর সেই জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের দেশে ফেরানো হয়েছিলো।
সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুদের একটি কৌশল হলো জাহাজ নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে সেফ জোন তৈরি করে। তারপর সেখান থেকে নিজেদের ডিমান্ড জানায়। এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা কোনো ডিমান্ড আমাদের জানায়নি।