কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রথম থেকেই সরব ছিল দেশের শোবিজ অঙ্গন। জনপ্রিয় নির্মাতা, চলচ্চিত্রশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী, ইউটিউবার, ইনফ্লুয়েন্সারাসহ সংগীত অঙ্গনের অনেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আসছেন।
অন্যান্য শিল্পীদের মত আর চুপ থাকতে পারেননি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান। বৃহস্পতিবার সকালে এক ফেসবুক পোস্টে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে প্রতিবাদী কণ্ঠে আওয়াজ তোলেন তিনি; জানান নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান।
তাহসানের পোস্ট করা সেই কবিতাটি হবহু তুলে ধরা হল-
এতগুলো যে তাজা প্রাণ হারাবার,
সহানুভূতির ভাষা অপ্রতুল প্রতিবার
যে কষ্ট জানে শুধু আপনজন,
শুধু শহীদের পরিবার।
প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে হবে শিল্পীর ব্যবচ্ছেদ,
তাই মানসিক বিবাদে তটস্থ থাকি
বেঁচে থাকতে চাই আমি এই মাতৃভূমে
আমি দেশপ্রেমিক কোনো কবি।
মেরুকরণের এই দেশে
দুই মেরুর উপাখ্যান প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে আমি সব্যসাচী নই,
ক্ষমতার বলয়ের বাইরে তাই গুজবের বলি হই
জ্বালাও পোড়াও সংঘাতের বিদ্রোহী কবিতো আমি নই।
শান্ত কবি স্থিরতা চায়,
শুধু একটাই অনুরোধ
দেশ গড়তে হবে তোমাদের,
গড়ো মেরুকরণের বিরুদ্ধে অবরোধ;
চিরায়ত সংঘাতের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবরোধ।
আমার সূর্য আজ অস্তমিত,
তোমরা নতুন রবি
করজোড়ে ক্ষমা চাই বারংবার,
শুধু একজন পরাজিত কবি।
শেষে হ্যাশট্যাগ দিয়ে তাহসান লেখেন #SaveBangladeshiStudents
কিন্তু, পোস্টটি শেয়ার করার পর পরই নেটিজেনদের একাংশ বেশ সমালোচনা করেন তাহসানকে নিয়ে। তাদের দাবি, সময়ের সঙ্গে সুযোগ নিয়েছেন তাহসান; যেখানে আন্দোলন ঘিরে শুরু থেকেই সরব ছিল অধিকাংশ তারকারা। অথচ এমন উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টির অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাহসানের সাড়া দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন অনেকে।
এক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘ঘুম ভেঙেছে।’ আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘সিরিয়াসলি ম্যান? এখন ঘুম ভাঙছে? আপনি আইডল ছিলেন আমার! আমার আইডল এখন রাফি, মুগ্ধ, আবু সাঈদ।’ কেউ উল্লেখ করেন, ‘প্রতিবাদটি আরও আগে করা উচিত ছিল।’
উল্লেখ্য, তাহসান শোবিজের বাইরেও পেশায় একজন শিক্ষক। দেশের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি। তাই তরুণ শিক্ষার্থীদের পাশে তাহসানের সমর্থন সেই শুরু থেকেই আশা করেছিলেন অনেকে।