মাহমুদুল হাবিব রিপন গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ডিলারের কাছে চাঁদা না পেয়ে টিসিবি ডিলারের প্রতিনিধি পারভেজ হোসেন(৩২)কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক বি এন পি নেতার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে তালা ঝুলে দিয়েছেন ঔ নেতা। গত রোববার বিকেলে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, টিসিবির আওতায় উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নে ইতিপৃর্বেই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১ হাজার ৬ শতটি পরিবারের তালিকা করা হয়। তালিকা অনুযায়ী গত বুধবার টিসিবির ডিলার কামাল হোসেন পণ্য উত্তোলন করে সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান।
বুধ ও বৃহস্পতিবার পণ্য বিক্রি করে দেড় শতাধিক কার্ডধারীর পণ্য অবিক্রিত থাকে। ২ দিন সরকারি ছুটিতে পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকায় গত রোববার সকাল থেকে অবিক্রীত দেড় শতাধিক কার্ডের পণ্য বিক্রি করেন ডিলার।
অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন বি এন পি সভাপতি আজহারুল ইসলাম ও ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক ডিলার কামাল হোসেনের প্রতিনিধি পারভেজ হোসেনের কাছে চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পারভেজ কে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয় তাকে গোডাউনে আটক রাখা হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা দরবার করে তাকে ছাড়িয়ে নেন। কিন্তু পরিষদের গোডাউনের ঘরে বি এন পি নেতার তালা ঝুলে আছে।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব বলেন, তিনি জরুরি একটি কাজে বাইরে ছিলেন, পরে শুনতে পান ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে তালা ঝুলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করবেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ইউনিয়ন বি এন পি নেতার ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায়না। ভুক্তভোগী পারভেজ বলেন, তাকে দুইবার মারধর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে গোডাউনে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে ডিলার কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগষ্টের যে কয় মাস টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়েছে -সেই কয়বারই বি এন পি নেতারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন। এছাড়া গত মাসে ১ হাজার ৬ শত কার্ডের মধ্যে বি এন পি নেতাদের ৫০০ শত কার্ড ভাগ দিতে হয়েছে। আমি অসহায় হয়ে গেছি তাদের কাছে। যে কোন সময় বিএনপির ছেলেদের দ্বারা আবারও হামলার আশংকা করছি। তিনি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে বি এন পি নেতা আজহারুল ইসলাম বলেন, ডিলার ও চেয়ারম্যান অনিয়ম করে অবিক্রীত পণ্যগুলো বিক্রি করেছেন। সে বিষয়ে তাদের সাথে কথা হয়েছে মাএ,আর তাকে মারলেই কি আমাদের ফাঁসি হবে?
অপরদিকে যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বাবু বলেন, আমাদের না জানিয়ে টিসিবির পণ্য বিক্রি করলে ঝামেলা তো হবেই।আর বি এন পির লোকজন কোথায় কি করবে তার জবাব কি আপনাকে দিতে হবে? থানা যুবদলের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, দলের নাম ব্যাবহার করে কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্হা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে থানা বি এন পির আহবায়ক ফারুক আহম্মেদ বলেন, দলের কেউ কোন অনিয়ম অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। বিস্তারিত জেনে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানার সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।