ভারতে মসজিদের নিচে মন্দির খোঁজার বাতিক তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। বিভিন্ন জায়গায় যেখানে ঐতিহাসিক বা ঐতিহ্যবাহী মসজিদ রয়েছে, সেখানেই মন্দির ছিল দাবি করে জরিপের আবেদন জানাচ্ছে কট্টর হিন্দুরা।
ভারতীয় আদালতও সেই অনুযায়ী নির্বিচারের আদেশ দিয়ে দিচ্ছে। যদিও ভারতের ভারতের উপাসনাস্থল আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একাধিক আপিলের শুনানিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি বলেছেন, উপাসনালয় নিয়ে আপাতত নতুন কোনো মামলা করা যাবে না।
পুনেয় ‘বিশ্বগুরু ভারত’ শীর্ষক বক্তৃতায় ভাগবত বলেন, “রামমন্দির তৈরি হওয়ার পর কেউ কেউ মনে করছেন তারা নতুন নতুন জায়গায় একই ধরনের বিষয় সামনে এনে হিন্দুদের নেতা হয়ে উঠবেন। এটা মানা যায় না।”
অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পরে আদালতে দাবি উঠেছে, এবার মথুরায় শাহি ইদগাহ মসজিদ ও বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ সরানো হোক। অতি সম্প্রতি একই দাবি উঠেছে সম্ভলের শাহি জামা মসজিদকে ঘিরেও। অতীতে এই সমস্ত জায়গায় মন্দির ছিল, এমনটা দাবি করে ফের তা নির্মাণের দাবিও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট কোনও জায়গার নাম না-করলেও মনে করা হচ্ছে এই ঘটনাগুলির দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন ভাগবত। সঙ্ঘপ্রধান বলেন, “প্রতি দিন নতুন নতুন বিষয় (সমস্যা) সামনে আনা হচ্ছে। এটা কী ভাবে মেনে নেওয়া যায়? এটা চলতে পারে না। আমরা যে সবাইকে নিয়ে বাঁচতে পারি, ভারতের সেটা দেখিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।”
সম্প্রীতির একাধিক নির্দশনও তুলে ধরেন ভাগবত। তিনি জানান, রামকৃষ্ণ মিশনে বড়দিন উদযাপিত হয়। এই প্রসঙ্গেই তার সংযোজন, “কেবল আমরাই এই কাজ করতে পারি। কারণ আমরা হিন্দু।” সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নিয়ে ভাগবতের ব্যাখ্যা, “এখানে সবাই সমান। এখানে সবাই নিজের মতো করে উপাসনা করতে পারেন। বাঁচার জন্য যেটা প্রয়োজন তা হল, সম্প্রীতি আর আইনশৃঙ্খলা মেনে চলা।” সংবিধান নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে শাসক-বিরোধী চাপানউতর দেখা গিয়েছে। এই আবহে ভাগবত বলেন, “দেশ এখন সংবিধান অনুযায়ী চলছে। এই ব্যবস্থায় মানুষ সেই প্রতিনিধিদেরই বেছে নেবেন, যারা সরকার চালাতে পারবেন। আধিপত্যের দিন চলে গিয়েছে।”