মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ। তার আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমিতে কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এসময় কবির পরিবার, ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
কবির ছোট ভাই নেহাল হাফিজ বলন, তিনি অলস প্রিয় মানুষ ছিলেন। চুল আঁচড়াতেও এক ঘণ্টা লেগে যেতো। গোসল করতেও সময় নিতেন। যখন তুখোড় কবি, তারকাখ্যাতি পেলেন, আমারও লোভ লাগলো একটু একটু লেখি। লিখতে লিখতে ১০০টা লিখি। যখন কবিতাগুলো উনাকে দেখালাম, দেখার পর বললেন, নাবালক কবিতা।
তিনি কবির স্মৃতিচারণ করে বলেন, এরপর প্রথম কাব্যগ্রন্থ বের হলে উনি কবিতার বই দেখে বললেন, শখের বসে নয় জীবন খরচ করে কবিতা লিখবে।
কবি হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়বেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
কবির মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নেওয়া হবে না বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কবির বড়ভাই দুলাল এ হাফিজ।
এর আগে, শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। পরে কর্তৃপক্ষ তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পান তিনি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙ্ক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।