আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বাংলা অগ্রহায়ন মাসের প্রথম দিন গ্রামে গ্রামে ঘুড়ে স্বচক্ষে দেখা যায় নবান্ন পালন।
গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শালগ্রাম, কালাইকুড়ি, সাগরপুর, কাল্লাগাড়ী, কৈকুড়ি, কোমারপুর, কোমারভোগ সহ বেশ কিছু গ্রামে ঘুড়ে দেখা গেল এসব গ্রামে কোন হিন্দু ধর্মাম্বলী নেই। কিন্তু আছে বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব।
এ উৎসব পালন উপলক্ষে প্রতিটি বাড়ীতে জড়ানো হয়েছে মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি ও আত্নীয়স্বজন। উৎসবটি পালন করা হচ্ছে ঈদের আমেজে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ী থেকে বাতাসে ভেঁসে আসছিল উন্নতমানের খাবার বিশেষ করে মহিষ ও গরুর গোস্ত রান্নার সুবাস। নবান্ন উৎসব পালন উপলক্ষে ওই সব গ্রাম সহ আশপাশের বেশ কিছু গ্রামে প্রতি বছরের মত এবারো জবাই করা হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক মহিষ, গরু ও খাসি।
নবান্ন উৎসবকে ঘিরে শালগ্রামে গ্রামে রাস্তার মোরে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী চুড়ি-ফিতা, আলতা ও বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী এবং জিলাপী, রসগোল্লা, চমচম, বাতাসা, মুড়কি ও পঁাপড় ভাজা সহ মূখরোচক নানান পন্যের পাশাপাশি বড় মাছের মেলা। গতকাল শনিবার উপজেলার শালগ্রামে গিয়ে কথা হল দিলবর আলী নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি ক্ষুদ্ধস্বরে বললেন -ওরা আসলে মিথ্যা কথা বলে ধর্মপ্রান মানুষকে বিভান্ত করে। নবান্ন কোন ধর্মের নয়, এটা বাঙ্গালীর ঐতিহ্য।
পূর্ব পূরুষরাও এ উৎসব পালন করেছে আমরাও করছি। ছেলে-মেয়ে সাথে জামাই আর নাতি-নাতনি ও নিকটআত্নীয় নিয়ে নতুন ধানের চালের ভাত গোস্ত খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম। এর সাথে ধর্মের লেজুর জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়। একই ধরণের কথা বলেন,ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের মেম্বার শালগ্রামে বাসিন্দা প্রবীন ব্যক্তি মহিউদ্দীন তালুকদার।
শালগ্রামের প্রবীন ব্যক্তি আলতান আলী খাঁ, আয়েন উদ্দীন সহ অনেকেই বলেন, পুর্ব পুরুষের আমল থেকেই এভাবে নবান্ন উৎসব পালন হয়ে আসছে। আর দিন দিন এ উৎসব পালনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোট কথা গ্রাম বাংলায় নবান্ন উৎসব পালন করা হয় অনেকটা ঈদের আমেজে।