বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের শিখন অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত মোংলায় ৪০টি গীর্জায় উদযাপিত হচ্ছে শুভ বড়দিন বাগেরহাটের রামপালে ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন বরখাস্ত ‎আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের ‎-জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান দুপচাঁচিয়ায় সাকিবকে মারপিটের ঘটনায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত দুপচাঁচিয়ায় ওএমএস ডিলার নিয়োগে লটারী অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই রাখাল নিহত গাইবান্ধার কামারজানিতে বালু মহাল ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ফুলবাড়ীতে তন্ত্র-মন্ত্রের খেলা ‘পাতা খেলা’ অনুষ্ঠিত বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

টাকার জন্য মাকে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রাখে ছেলে

দুপচাঁচিয়া বগুড়া প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৯৬

 

দুপচাঁচিয়া(বগুড়া)প্রতিনিধি: প্রেমিকার চাহিদা মিটাতে ও হাত খরচের টাকার জন্য  গর্ভধারিনী মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাত পা বেঁধে ডিপ ফ্রিজে ভরে রাখে আপন ছেলে । এই নরকিয় হত্যা কান্ড ঘটায় নিহতের গর্ভ যার ছেলে সাদবিন। প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের পরে একথা জানিয়েছে র‍্যাব।

মঙ্গলবার সকালে র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় বলেন।

সাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়ার দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা উপাধ্যক্ষ ও উপজেলা মসজিদের খতিব আজিজুর রহমানের ছোট ছেলে।

সোমবার দিবাগত রাত বারোটার দিকে অভিযুক্তের দাদাবাড়ি পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার পাঁচ পীর আড়োবাড়ী এলাকা থেকে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে (১৯) আটক করা হয়। পরে হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় র‍্যাব।

এর আগে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার সাদ বিন আজিজুর রহমানের মা উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) লাশ বাড়িতে থাকা ডিপফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার জানান, হত্যার পর পরিবারের সাথে কথা বলে র‍্যাব জানতে পারে, উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) সাথে তার ছেলে মো. সাদ বিন আজিজুর রহমানের হাত খরচের টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিলো এবং বাসা থেকে প্রায় প্রতিদিনই ৫০০-১০০০ টাকা হারিয়ে যেতো।

ঘটনার দিন সকালে মায়ের সাথে হাত খরচের টাকা নিয়ে কথার কাটাকাটি ও বাকবিতন্ডা হয় সাদের। পরে সে রাগ করে সকালের নাস্তা না খেয়ে মাদ্রাসায় চলে যায়।

মেজর এহতেশামুল জানান, এসব বেশি মাথায় রেখে হত্যাকারীর অনুসন্ধান চালানো হয়। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে হত্যাকাণ্ডের আনুমানিক সময় মা ও ছেলের অবস্থান একই জায়গায় ছিল। আবার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই দিন নিহতের ছেলে ছাড়া সন্দেহভাজন কাউকে দেখা যায়নি।

এরপর আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাদ বিন হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলে জানান র‍্যাব কমান্ডার। তিনি বলেন, সাদ বিন আজিজুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মায়ের সাথে মনোমালিন্য ছিল। আর সম্ভবত জুয়া খেলায় সে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য সে টাকা নিয়ে প্রতিদিন বাড়িতে ঝগড়া করত মায়ের সঙ্গে।

হত্যার দিনের ঘটনার বর্ননায় র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, মাদ্রাসায় সকাল সাড়ে ১২ টার দিকে ক্লাসের বিরতির সময় বাসার প্রবেশ করে সাদ তার মাকে তরকারি কাটতে দেখে। ওই সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার মায়ের পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মা বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে ভিকটিমের হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নীচে তরকারি কাটার বটি লেগে হালকা কেটে যায়। পরে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান সালমা।

এরপর দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতর রেখে দেয়। ঘটনাটি ডাকাতির ঘটনা হিসেবে সাজানোর জন্য সাদ বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে তার বাবা এবং মায়ের বেডরুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ মেরে কুড়াল সেখানে রেখে বাসার মেইন গেইটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়।

রোববার দুপুরের উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে নিজ বাসায় উম্মে সালমা খাতুনের লাশ (৫০) ডিপ ফ্রিজের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়। বাড়িতে আলমারি ভাঙ্গা ও জিনিসপত্র এলোমেলো রাখা ছিল।

উম্মে সালমার স্বামী খতিব আজিজুর রহমান স্থানীয়ভাবে সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মাঝে ডাকাতির আতঙ্ক চলে আসে।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, উম্মে সালমাকে হত্যার ঘটনায় তার বড় ছেলে নাজমুস সাকিব অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেছিলেন। এরপর এ ঘটনায় ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তবে অভিযুক্তকে এখনও আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। হস্তান্তর করলেই আমরা তাকে আদালতে পাঠাবো।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com