খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বৃহস্পতিবার পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়। এ ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়েছে পাশের জেলা রাঙামাটিতেও। এতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় দুপক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় দুপুর ২টা থেকে ১৪৪ ধারা জারির নোটিশ জারি করা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত আদেশে আজ রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, নাশকতা রোধে খাগড়াছড়ি পৌর শহর ও জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেকোনও ধরনের সহিংসতা রোধে এ ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।’
একইভাবে আজ সকাল থেকে রাঙামাটিতে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনার পর পৌর এলাকায় বেলা একটা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
এর আগে, খাগড়াছড়ির ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সকাল থেকে রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে একজন নিহত ও কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ কমপক্ষে ৩০টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ১০টার দিকে খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের ঘরবাড়ি, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ এবং তিন জন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটি স্টেডিয়াম এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। এতে প্রায় কয়েক হাজার লোকের সমাগম হয়। স্টেডিয়াম থেকে মিছিলটি বনরূপা এলাকায় পৌঁছালে তাতে কে বা কারা পাথর নিক্ষেপ করে। এরপর পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়াপাড়ার নিউজিল্যান্ড এলাকায় মামুন নামের এক যুবককে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে দীঘিনালা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেছিল। সেখানে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড়ি জনপদ।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষের জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রাতের গোলাগুলি ও বিকেলের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন জন পাহাড়ি নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ১৫ জন।