দেশের জনপ্রিয় গায়ক সায়ান চৌধুরী অর্ণবের স্ত্রী সুনিধি নায়েককে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। সুনিধি নায়েক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পরিচিত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। কেবল হুমকি নয়, তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে পাঁচ লাখ রুপি। এছাড়া, ডার্ক ওয়েবে তার ছবি ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকিও মিলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) পরিচয় দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পাঁচ লাখ টাকা না দিলে সুনিধি নায়েক ও তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়। এমনকি তার ছবি ডার্ক ওয়েবে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের সাবেক শিক্ষার্থী সুনিধি কর্মসূত্রে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত বুধবার বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। সেদিন অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তিনি। পরে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি হায়দরাবাদের সিবিআই পরিচয় দিয়ে তার ফোনে কল করে। সুনিধির বাড়ির একশো মিটারের মধ্যে শান্তিনিকেতন থানা। ঘটনাটি দ্রুত জানাজানি হওয়ায় শান্তিনিকেতনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানা।
সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েক জানান, গত বুধবার ফোনে ওই অপরাধীরা তাকে নরেশ গোয়েল নামের এক ব্যক্তির কথা বলে। তাদের অভিযোগ সুনিধি ওই ব্যক্তির অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার নামে একটি ক্রেডিট কার্ডও তোলা হয়েছে। এই অপরাধে সুনিধিকে গ্রেফতার করা হবে। অভিযোগ ছুঁড়ে কথোপকথন শুরু হলেও, পরে টাকা না দিলে সুনিধি ও তার বাবাকে খুনের হুমকি দিতে থাকে ওই ব্যক্তি। ভয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের ৫ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন এই শিল্পী।
সুনিধি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম সত্যিই হয়তো হায়দরাবাদের সিবিআই পুলিশ ফোন করেছেন। পরে বুঝতে পারি এরা জালিয়াত। প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করছে।’
সংগীতশিল্পী সুনিধির অভিযোগ, প্রতারকেরা জানায়, তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে মেসেজ বা ফোন করলেও নাকি তারা জানতে পারে। ওরা এও বলেন যে, আমার ছবি ডার্ক ওয়েবে ছেড়ে দেবে। আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। গত তিন দিন আমি ভীষণ ভয়ে ছিলাম। আমি নিরাপত্তা চাই, আমি আমার টাকা ফেরত চাই, অপরাধীদের শাস্তি চাই।’
সুনিধি নায়েক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে পরিচিত। শেকড়ের টানে প্রায়ই তিনি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। সে কারণে পূর্বপল্লীতে একটি বাড়িও ভাড়া নিয়েছেন। ঘটনার দিন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনে হত্যার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে অপরাধীদের কথা মতো নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠিয়ে দেন। রাতে স্থানীয় বন্ধুদের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ করেন সুনিধি। ঘটনার পর শান্তিনিকেতনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুনিধি।
আসামে জন্ম নেওয়া সুনিধির সঙ্গে বিশ্বভারতীতে পরিচয় অর্ণবের। সুনিধির কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন অর্ণব। সেই পরিচয় থেকে প্রেম ও ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে বিয়ে করেন তারা। প্রায়ই বাংলাদেশে আসেন সুনিধি।