নওগাঁর রাণীনগর থানার আলোচিত ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আবু ওবায়েদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: গাজিউর রহমান। ওসি আবু ওবায়েদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে থানার স্বাভাবিক সেবা প্রদান কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছিলো। তাই তার বদলীর খবরে উপজেলায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য সচেতন মহলের।
সূত্রে জানা আবু ওবায়েদ রাণীনগর থানায় গত বছরের নভেম্বর মাসের ০২তারিখে ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি নানা অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি আর হয়রানীর রাজ্যে পরিণত করেন উপজেলাকে। অহেতুক বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তৎকালীন সময়ের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক করে নিজের চাহিদা মাফিক অর্থ আদায় করতেন। যারা তার চাহিদা পূরণ করতো তারা খালাস পেতো আর যারা তার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হতো তাদেরকে হয়রানীমূলক মামলায় আসামী করে জেল হাজতে পাঠাতেন।
তার সময়ে থানার প্রতিটি কর্মকর্তারা তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারেননি। থানার আরেক ওসির (তদন্ত) সঙ্গে ছিলো আবু ওবায়েদের দা-কুড়াল সম্পর্ক। ওসির এই রকম শত শত অনৈতিক কর্মকান্ডে যেমন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলো উপজেলার সাধারণ মানুষরা তেমনি থানার প্রতিটি সদস্যরাও সন্তোষ ছিলেন না ওসি আবু ওবায়েদের কর্মকান্ডে। তার বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ড নিয়ে একাধিকাবার প্রকাশিত প্রতিবেদন ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করেছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার অনেকেই বলেন ওসি আবু ওবায়েদ যে সকল থানায় ওসির দায়িত্ব পালন করেছেন সেই সকল থানায় নানা অনিয়মের কারণে ব্যাপক ভাবে আলোচিত হয়েছেন। বিভিন্ন থানায় তার পূর্বের রেকর্ড খুবই খারাপ। উপজেলায় অবৈধভাবে মাটি কাটা থেকে শুরু করে বৈধ ভাবে পুকুর খনন করলেও তাকে চাঁদা দিতে হয়েছে। যে কোন মামলায় তিনি দুই পক্ষের কাছ থেকেই ঘুষ নিয়ে তা নিষ্পত্তি না করে দ্বন্দ্বকে আরো জটিল করে দিতেন। বিভিন্ন ইট ভাটা, চাউল কল থেকে শুরু করে এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যেখান থেকে ওসি আবু ওবায়েদ চাঁদা আদায় করেননি। আবু ওবায়েদ দালালদের মাধ্যমে বিভিন্ন মামলার রফাদফা এবং ঘুষ গ্রহণ করতেন। অর্থের বিনিময়ে ওবায়েদ অবৈধ কর্মকান্ডকে বৈধতা দিতেন। এককথায় আবু ওবায়েদ ছিলেন রক্ত চোষা জোঁকের মতো।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: গাজিউর রহমান বলেন প্রশাসনিক কারণে রাণীনগর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আবু ওবায়েদকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্স অফিসে বদলী করা হয়েছে। খুব দ্রুতই ওই থানায় আরেকজন ওসিকে পদায়ন করা হবে।