বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় ‘তৃতীয় শক্তি না খুঁজে নিজেদের অপশক্তিকে চিহ্নিত করুন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। বুধবার (৩১ জুলাই) আন্দোলনকারীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, গুলি, দমনপীড়ন, গ্রেফতার ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দাও জানান ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারপ্রধান এবং সরকারের মন্ত্রী-নেতারা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কতিপয় আওয়ামী ভাবাপন্ন সদস্য প্রতিনিয়ত মিথ্যাচারে আশ্রয় নিয়ে বলছে, তথাকথিত ‘তৃতীয় শক্তি’ নাকি গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
অথচ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে ছাত্রসহ সাধারণ জনতার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। তা ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এবং সরকারি দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের হাতে। তার পরও সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য এই মিথ্যাচারের কোরাস গেয়েই চলেছে। তৃতীয় শক্তি না খুঁজে নিজেদের অপশক্তিকে চিহ্নিত করুন।
তিনি বলেন, ‘সরকার এবং সরকারি বাহিনী এমনভাবে মিথ্যাচারে নিমজ্জিত হয়ে গেছে যে সারা বিশ্বের মানুষ যেখানে দেখেছে, আবু সাঈদকে পুলিশ সরাসরি সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, সেই মামলায় আসামি করে জেলে পাঠিয়েছে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আলিফ শাহারিয়ার মাহিমকে।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশ-বিদেশের কোনো পরামর্শ না শুনে সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মামলা, হামলা, দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, দিনাজপুর, গাজীপুর, যশোর, ঠাকুরগাঁও, মাগুরা, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জায়গায় বর্বরোচিত কায়দায় সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ চালিয়েছে। সারা দেশে প্রায় শতাধিক নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রেফতার করেছে, ছাত্রীদের করেছে লাঞ্ছিত। পুলিশের নির্মম আঘাত থেকে রক্ষা পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া। হেনস্তার শিকার হন সাংবাদিকরাও।’
বিবৃতিতে আপামর জনতা ছাত্র-যুবকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের আনাচ-কানাচে ঘরে ঘরে আজ সরকারের পদত্যাগের দাবি উচ্চারিত হচ্ছে। সরকার নজিরবিহীন গণহত্যা ও নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে। এই সরকার আজ রাষ্ট্রঘাতী-প্রাণঘাতী সরকারে পরিণত হয়েছে। গণধিকৃত সরকারকে বিদায় করে জাতির সব সমস্যা সমাধানের রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না এই শাসকগোষ্ঠী।