বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের শিখন অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত মোংলায় ৪০টি গীর্জায় উদযাপিত হচ্ছে শুভ বড়দিন বাগেরহাটের রামপালে ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন বরখাস্ত ‎আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের ‎-জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান দুপচাঁচিয়ায় সাকিবকে মারপিটের ঘটনায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত দুপচাঁচিয়ায় ওএমএস ডিলার নিয়োগে লটারী অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই রাখাল নিহত গাইবান্ধার কামারজানিতে বালু মহাল ঘোষণার প্রতিবাদে মানববন্ধন ফুলবাড়ীতে তন্ত্র-মন্ত্রের খেলা ‘পাতা খেলা’ অনুষ্ঠিত বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইউপি চেয়ারম্যানের নাতির নামে কার্ড, মৃত ব্যক্তিও তুলছেন চাল

নিজস্ব সংবাদদাতা আদমদীঘি(বগুড়া)
  • আপডেট টাইম সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪
  • ২৭২
ছবি-সংগৃহিত


বগুড়ার আদমদীঘিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ও চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের তীঁর চাঁপাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ডিলাদের দিকে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ইউপি চেয়ারম্যানের নাতির নামে দেওয়া হয়েছে কার্ড, বছরজুড়ে মৃত ব্যক্তির নামে তোলা হচ্ছে চাল, জীবিত ব্যক্তিদের কার্ডের চাল আত্মসাৎ, অনেকের নামে কার্ড থাকলেও তাঁরা সেটি জানেই না।

আবার পুরুষের নামের পাশে নারীর ছবি লাগিয়ে এবং প্রবাসীর নামে কার্ড বানিয়ে করা হচ্ছে চাল আত্মসাৎ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের বিহিগ্রাম সাহানাপাড়ার বাসিন্দা মোয়াজ্জিম হোসেন প্রায় এক বছর আগে মারা গেছেন। মৃত্যুর পরও একাধিকবার তাঁর কার্ড দিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি করে চাল ওঠানো হয়েছে। মোয়াজ্জিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, তিনি (মোয়াজ্জিম) গত এক বছর আগে মারা গেছেন।
এই কর্মসূচির ডিলার মাজেদুর রহমান মাজেদের দাবি, নাম বাদ না যাওয়ায় তাঁর (মোয়াজ্জিম) নামে তাঁর কোনো এক আত্মীয় চাল উঠিয়ে নেন। তবে সরেজমিনে গিয়ে ডিলারের কথার সঙ্গে মিল পাওয়া যায় না। চাল বিতরণের সময় দেখা যায়, মোয়াজ্জিমের চাল তুলছেন ডিলারের লোকজন। এমনকি আঙুলের ছাপও দিচ্ছেন তাঁরাই।
ওই ইউনিয়নের বেজার গ্রামের গৃহবধূ লাভলী আক্তারের নামেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড রয়েছে। তবে তিনি জানেনই না তাঁর নামে রয়েছে কার্ড। গৃহিণী হলেও তাঁর পেশা দেওয়া আছে দিনমজুর। অনুসন্ধানে দেখা যায়, লাভলীর কার্ড দিয়ে একাধিকবার চাল ওঠানো হয়েছে। আর তা উঠিয়েছেন ডিলার নিজেই।
ভেনল্যা গ্রামের বাসিন্দা শাহিদুল ইসলামের নামেও রয়েছে একটি কার্ড। তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডে শাহিদুল ইসলামের ছবির পরিবর্তে রয়েছে এক নারীর ছবি। স্থানিয়রা বলছেন শাহিদুল ইসলাম প্রবাসে থাকেন এবং ছবিটি তাঁর স্ত্রীর। নামের সাথে ছবির অমিল থাকলেও শাহিদুলের স্ত্রী চাল পাওয়ায় এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
চাঁপাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের নাতি সোহাগ পারভেজ। চাল বিতরণের দায়িত্বে দেখা যায় তাঁকে। তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় রয়েছে সোহাগ পারভেজের নামও। নাতির নামে কার্ড রয়েছে, তা জানেন না ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, কারা কারা কার্ড পাওয়ার যোগ্য তাঁদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের দায়িত্ব থাকে ইউপি সদস্যদের। তাঁরা আমার নাতিকে কার্ড দেওয়ার যোগ্য মনে করেছে, তাই হয়তো কার্ড দিয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
সম্প্রতি ইউনিয়নের বিহিগ্রাম এলাকায় অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, ডিলারের নিয়োগ করা লোকেরা চালের পরিবর্তে টাকা বিতরণ করছেন। আবার কয়েকজন চাল নিলেও সেই চাল ডিলারের লোকদের কাছেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার থাকার কথা থাকলেও সেখানে দেখা যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার মাজেদ বলেন, ‘যাঁদের কার্ড আছে, আমি তাঁদের বা তাঁদের কার্ড কেউ নিয়ে এলে চাল দিই। চালের বদলে টাকা দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, ‘ইউপি সদস্যরা যাঁদের নাম দিয়েছেন, তাঁদের নামেই কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। ডিলার চাল দিচ্ছেন নাকি টাকা দিচ্ছেন এসব খতিয়ে দেখব। আর নাম একজনের, ছবি অন্যজনের এটা হতে পারে না। কার্ড করার সময় সবাইকে পরিষদে আসতে হয়েছিল। এমন কিছু হওয়ার কথা না।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিষয়গুলো জানা ছিলো না। তবে চাল বিতরনের সময় ওই এলাকায় একজন ট্যাগ অফিসার দেওয়া হয়। অনিয়মের অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একাত্তরের দেশ

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com