ভারত থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আজ রাতেই ট্রেন বাংলাদেশে আসবে। প্রথম চালানে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ বিষয়ক টাক্সফোর্সের সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে। ৫০০০ টন পেঁয়াজের মধ্যে প্রথম চালানে ১৬৫০ আজ আসছে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু পেঁয়াজ পঁচনশীল পণ্য সেহেতু আমরা ধরে রাখবো না। আগামীকাল থেকে আমরা ডিলারদের কাছ থেকে ডিও জমা নেয়া শুরু করবো। আমরা ৪০ টাকা নির্ধারিত মূল্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ওপেন সেল করবো।
ঢাকা এবং চট্টগ্রামে বিক্রি করার কারণ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি ঢাকায় ৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করি, আমি বিশ্বাস করি ৬৪ জেলার অনন্ত ৩০ জেলায় পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় চলে আসবে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম ২৫ শতাংশ বাড়লেও আমাদের স্থানীয় বাজারে ২ থেকে ৪ শতাংশের বেশি দাম বাড়েনি৷ গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং পাম আয়েলের দাম ১১ থেকে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও আমাদের আমদানিকারক এবং মিল মালিকদের সহযোগিতায় ১৬৩ টাকায় লিটার এবং ১৪৯ টাকায় খোলা বাজারে তেল বিক্রি করতে সমর্থ হয়েছি৷
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, আমরা সরু চাল, চিকন চাল এবং মোটা চাল এই পদ্ধতি থেকে বের হয়ে এসে জাতভিত্তিক চালের নাম মিলার,পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে বিক্রির একটি রুপরেখা তৈরী করেছি।
তিনি বলেন,আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে এটা কার্যকরী হবে৷ সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা বাজারদর সহনশীল পর্যায়ে রাখতে পেরেছি। আশা করি আগামী ঈদ পর্যন্ত এটা ধরে রাখতে পারবো৷
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিনিধিরা আছেন৷ আপনারা জানেন তাদের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে৷ কিভাবে যৌক্তিক মূল্যটা দীর্ঘসময় ধরে রাখতে পারি সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ কিছু চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে আছে৷ আপনারা অবহিত আছেন পরিবহণ তার মধ্যে অন্যতম৷ সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি৷ আমাদের বিভিন্ন এজেন্সি কাজ করছে৷
আহসান ইসলাম বলেন, রাজস্ব বোর্ডের সাথে কথা বলেছি । আগামী বাজেটের আগেই এসেনশিয়াল কমডিটিগুলো যেন সারাবছরের জন্য একটা যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে পারি৷ যাতে শেষ মুহুর্তে এসে আমাদের কোন পরিকল্পনার সংশোধনী করতে না হয়৷ একইসাথে আমাদের আমদানিকারক ও উৎপাদক আছে। তাদের জন্য ১২ মাসের একটা পরিকল্পনা হলে সবার জন্য সুবিধা হয়৷
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের যে অবস্থাই হোক আমাদের আগামী দুই থেকে তিন মাস অর্থাৎ কোরবানীর ঈদ পর্যন্ত পণ্যের সরবরাহ বিশেষ করে ভোজ্যতেল যথেষ্ট পরিমানে আমদানি করা হয়েছে বা সাপ্লাই চেইনে আছে৷ চিনি নিয়েও আমাদের কোন সমস্যা নাই৷ চিনি নিয়ে সকল মিল মালিক এবং পাইকারি বিক্রেতারা আশ্বস্ত করেছেন৷ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়েও কোন সমস্যা হবে না৷ কৃষিজ পণ্যের বাজার দরও অনেকটা যৌক্তিক পর্যায়ে চলে এসেছে৷ কিছু পণ্যের যৌক্তিক যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তার থেকেও কম দামে বিক্রিব করা হচ্ছে৷ এটা রমজানে অনেকের জন্য সাশ্রয়ী৷
তিনি আরও বলেন, টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে যে চাল,চিনি,তেল,ডাল ও ছোলা দেয়া হচ্ছে এটাতে বাজারে, বিশেষ করে উপজেলা শহরগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে৷ সেটার একটা সুফল বাজার পাচ্ছে৷ একই সাথে নতুন সবজি ওঠায় সবজির বাজারেও স্বস্তি লক্ষ্য করছি৷
একাত্তরের দেশ