যুদ্ধ শুরুর পর থেকে চরম মানবেতর পরিস্থিতিতে দিন কাটছে গাজার বাসিন্দাদের। হামলার ভয়ের মধ্যেই চরম ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় মুমূর্ষু অবস্থা অনেকেরই।
এরই মধ্যে, সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েও পড়তে হচ্ছে হামলার মুখে। ছয় মাস পর সন্তানদের মাছ খাওয়ার শখ পূরণে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন জালাল কারান নামে ফিলিস্তিনি এক বাবা।
আগে মাছ ধরতে সমুদ্রের দূর দূরান্তে চলে যেতেন ফিলিস্তিনি জেলে জালাল কারান। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পানিতে নামার কোন সুযোগই পাননি। কারণ মানুষ দেখলেই গুলি চালায় ইসরাইলি হায়েনারা।
জালাল বলেন, আমরা বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করলেই হামলার মুখে পড়তে হয়। আমি কয়েক দফা বেঁচে ফিরেছি। কিন্তু বাচ্চারা না খেয়ে আছে দেখে আজ আর থাকতে পারলাম না।
তিনি জানান, সমুদ্রে জাল ফেলে টুনা মাছ ধরেছেন তিনি। সেটি দিয়ে পরিবার নিয়ে ইফতার করবেন এই ফিলিস্তিনি জেলে। তবে তিনি বলেন, একদিন নয়, তার প্রয়োজন প্রতিদিন মাছ ধরা।
রমজান মাস, সামনেই ঈদ। তাই পরিবারের জন্য খাবার ও অন্য প্রয়োজনীয় সব জিনিস কিনতে হলে কারানের মাছ ধরা খুবই জরুরি। কারণ মাছ বিক্রি করেই চলে তার ও পরিবারের পেট।
প্রতি বছর এই সময়টায় পরিবারের জন্য নানা খাবারের আয়োজন থাকতো সেহরি আর ইফতারে। কিন্তু যতবারই সে চেষ্টা করেছে, তাকে পড়তে হয়েছে হামলার মুখে।
জালাল বলেন, ভাগ্য ভালো, সাগরপাড়ের খুব কাছেই জাল ফেলেছিলাম। ইসরাইল তারপরও গুলি করেছে। নৌকার খুব কাছাকাছি পড়েছে গুলিগুলো। এমন একটা দিন নেই যেদিন ওরা আমাদের তাড়া করে না।
এই জেলে জানান, নানা রকম মাছ ও সামুদ্রিক খাবারের জন্য গাজা বিশ্বখ্যাত হলেও যুদ্ধ শুরুর পর অন্য সবকিছুর মতোই মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে সেখানে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
ফিলিস্তিনি জেলে জালাল কারান বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর ছয় মাসে আমরা কোন মাছ খাইনি। সমুদ্রের পাড়ে বাড়ি হলেও পানিতে জাল ফেলতে হলে আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।